ডেস্ক নিউজ ঃ মৌজা ও প্লটভিত্তিক ডিজিটাল ভূমি জোনিং’ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সব মৌজায় ডিজিটাল ও স্যাটেলাইট ইমেজের মাধ্যমে মানচিত্র তৈরি করে ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। ১২ মে এ প্রকল্পের ক্রয় পরিকল্পনায় অনুমোদন দেওয়া হয়।
দেশের ১ লাখ ৩৮ হাজার ৪১২টি মৌজার ম্যাপ ডিজিটাইজ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ডিজিটাইজড ম্যাপের সঙ্গে ক্রয় করা ভূমির স্যাটেলাইট ছবি সমন্বয় করা হবে। এ প্রকল্প কার্যকর হলে কার্যকর ডিজিটাল ক্যাডাস্ট্রাল ম্যাপ তৈরি হবে। ফলে এক ক্লিকেই দেখা যাবে জমির শ্রেণি কী এবং জমির মালিকের সব তথ্য।
রোববার (২২ মে) ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ভূমি সেবা সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষ্যে ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশনের বিভিন্ন উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়। ভূমি ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের মধ্যে নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর, খতিয়ান/পর্চা, জরিপ ও জমির ম্যাপ সম্পর্কিত কাজ করে ভূমি মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে ভূমি নিবন্ধন সম্পর্কিত কাজ করে আইন মন্ত্রণালয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের নামজারি ও খতিয়ানের ডাটাবেজ আইন মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত নিবন্ধন অধিদফতরের সঙ্গে সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শিগগিরই ই-নামজারির জন্য আধুনিক ফরম চালু করা হবে জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই ফরম চালু হলে আবেদন করার সময় আবেদনে ত্রুটি আছে কি না, তা বোঝা যাবে। এ ছাড়া কল সেন্টারের মাধ্যমেও নামজারির আবেদন জমা দেওয়া যাবে। জমির যেসব ডকুমেন্ট সরকারের কাছে রক্ষিত আছে, তার কপি আর নাগরিককে নামজারি আবেদনের সময় জমা দিতে হবে না। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নিবন্ধন দলিলমূলেও নামজারি করা হবে। এতে জমি হস্তান্তরে নতুন করে নামজারির প্রয়োজন হবে না।
এসব উদ্যোগ পুরোদমে কার্যকর হলে জমির মালিকানা হস্তান্তরের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে আসবে। ভূমি সেবা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে নতুন ফরম চালুর কার্যক্রম দ্রুত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী মাসেই নতুন ফরম চালু করা সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে ৬৫ লাখ নামজারি আবেদনের মধ্যে ৫৭ লাখ আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
‘ভূমি অফিসে না এসে ভূমি সেবা গ্রহণ করুন’ প্রতিপাদ্যে গত বৃহস্পতিবার (১৯ মে) ভূমি সেবা সপ্তাহ শুরু হয়েছে, যা চলবে আগামী সোমবার (২৩ মে) পর্যন্ত।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ পর্যন্ত ৫ কোটি ১৩ লাখ খতিয়ান ডিজিটাইজ করা হয়েছে। একটি খতিয়ান থেকে পরবর্তী সময়ে কতটি খতিয়ান তৈরি হয়েছে তাও জানা যাবে ডিজিটাল সিস্টেম থেকে। এতে বোঝা যাবে মূল খতিয়ানের অন্তর্গত জমি এবং মূল খতিয়ানের অন্তর্গত অন্যান্য খতিয়ানের জমির পরিমাণের মধ্যে সামঞ্জস্য। এ ছাড়া খতিয়ান ডাটাবেজ নিবন্ধন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সমন্বয় করা হলে একই জমি বারবার বিক্রি হওয়ার কোনো ধরনের সুযোগ থাকবে না এবং জাল দলিল তৈরি রোধ হবে। এখন কিউআর কোড দিয়েও দলিলের সঠিকতা এখন যাচাই করা যাচ্ছে।
আড়াই কোটি হোল্ডিং ডিজিটাইজ করা হয়েছে, বাকিগুলোও খুব দ্রুত শেষ হবে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এতে বলা হয়, মানুষ এখন ইউনিয়ন ভূমি অফিসে না গিয়েই ভূমি কর দিতে পারছেন। বর্তমানে এনআইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে কিংবা রেজিস্ট্রেশন ছাড়া— দুভাবেই ভূমি কর জমা দেওয়া যাচ্ছে। এনআইডি নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সরাসরি ভূমি উন্নয়ন কর দেয়ার ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মূল ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবস্থায় জমির মালিকের প্রোফাইলে না ঢুকেই জমির মালিকের নিবন্ধিত ও হোল্ডিং এন্ট্রি সম্পন্ন করা জমির ভূমি উন্নয়ন কর দেয়া যাবে। অর্থাৎ যেকোনো ব্যক্তি ভূমি উন্নয়ন কর অপরের পক্ষেও দিতে পারবেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি ৮ লাখ সুবিধাভোগী অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই ভূমি উন্নয়ন কর দেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। ৩ কোটি জমির তথ্য ইতোমধ্যে ম্যানুয়াল থেকে ডিজিটালে রূপান্তরিত হয়েছে। প্রায় ৭০ শতাংশ নাগরিক স্বচ্ছভাবে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেছেন। অন্তত ৫০ শতাংশ নাগরিকের হয়রানি কমেছে। প্রতিদিন ৩০-৪০ লাখ টাকা তাৎক্ষণিকভাবে সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে।
(সূত্র জুমবাংলা)
Leave a Reply