সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: অরাজনৈতিক সংগঠন হেযবুত তওহীদ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার আয়োজনে শনিবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০ টার সময় উকিলপাড়াস্থ সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের হলরুমে আলোচনা সভা সম্পন্ন হয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদন আহমদ রোমান সরকারের স ালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা হেযবুত তওহীদ সংগঠনের বিভাগীয় আমির মো. আলী হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা সাধারণ সম্পাদক আহমদ রোমান সরকার,নারী বিভাগের জেলা প্রধান মফিকুল বেগম সোহানা। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ে নেতিবাচক গুজব আমাদের সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এর ফলে মানুষ,সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। ধর্মান্ধতা, অন্যায়, শোষণ ও জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছর পরও আমরা গুজব ও হুজুগের তান্ডব দেখতে পাচ্ছি। বিগত দিনে আমরা বার বার গুজব রটিয়ে হামলা, হত্যা, অগ্নি সন্ত্রাসের তান্ডবলীলা দেখেছি। কোরআন অবমাননা, রসুলকে অসম্মান করা ইত্যাদি নানা প্রকার গুজব ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের শতশত বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। এসব প্রতিরোধে এখনই সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মানুষের মধ্যে সুস্থ চিন্তা ধারার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। যাতে ধর্মব্যবসায়ী যেসব শ্রেণি গুজব ছড়ায়, তারা তাদের প্রভাবিত করতে না পারে। তেমনই এক গুজবের ফলে ৭ বছর আগে নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে সৃষ্টি হয় এক ধ্বংসযজ্ঞ। ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ নোয়াখালীতে গুজব রটিয়ে, মসজিদকে গীর্জা নির্মাণ আখ্যা দিয়ে হেযবুত তওহীদের দুই সদস্যকে হত্যার বিবরণ তুলে ধরে প্রধান অতিথি বলেন, সেদিন নির্মাণাধীন মসজিদকে গির্জা বলে গুজব রটিয়ে দিয়ে,মিথ্যা হ্যান্ডবিল বিলি করে ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণি ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তারা হামলা চালায়। দুজন সদস্যকে প্রচÐ প্রহারের পর তাদের হাত পায়ের রগ কেটে দেয়। তাদের চোখ উপড়ে নেয়। তারপর গরু জবাই করা ছুরি দিয়ে জবাই করা হয়। পেট্রোল ঢেলে তাদের দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার আগে থেকেই সেই স্থানীয় স্বার্থান্বেষী কুচক্রীমহল ও ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণির ষড়যন্ত্র সম্পর্কে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছিল। আমরা মনে করি, কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে উদ্যোগ নিলে এই মর্মান্তিক নজিরবিহীন এঘটনাটি ঘটতনা। এই ঘটনার প্রায় আড়াই বছর পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে এই মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়। বহু আসামী আইনের আওতায় আসেনি, যারা এসেছে তারা রাজনৈতিক হয়রানীর ধুয়া তুলে সহজেই জামিনে বেরিয়ে এসে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছেনা। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, তারা আবারও হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, মিথ্যাচার চালাচ্ছে ও হামলার উসকানি দেওয়া আরম্ভ করেছে। বিশেষ করে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বিরাজমান শান্তিময় পরিস্থিতিকে অশান্ত করে তোলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই অপপ্রচারকারী ও হামলার চক্রান্তকারী কুচক্রীমহলকে দ্রæত আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখী করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। এদের বিরুদ্ধে এখনই আইনী শক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এরা যে কোনো ধরনের তাÐব সৃষ্টি করতে পারে। সেক্ষেত্রে কেবল হেযবুত তওহীদই ক্ষতিগ্রস্ত হবেনা, সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সমাজ, ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ। বিশেষ অতিথি হেযবুত তওহীদের নারী বিভাগের প্রধান এবং শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী বলেন,সোনাইমুড়ীতে যেখানে গুজব-সন্ত্রাসীরা তান্ডবলীলা চালিয়েছিল, সেই ধ্বংসস্তুপের উপরেই বর্তমানে আমরা নির্মাণ করেছি “চাষীর হাট উন্নয়ন প্রকল্প।” সেই মসজিদটি এখন পুননির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় হচ্ছে। আমরা হতোদ্যম হইনি, নিরাশ হইনি। আমরা মনে করি আমরা যদি সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকতে পারি, সমাজের কল্যাণমুখী কার্যক্রম চালিয়ে যাই, তাহলে শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে থাকবেন। কাজেই দেশজুড়ে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের মালিকানাধীন ভ‚মি, পুঁজি ও মেধাকে একত্রিত করে আমরা বহু উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছি। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের সাবেক জেলা আমির মো. ইসমাঈল হোসেন, গণমামাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক আরমান আলী, জেলা অর্থ সম্পাদক মো. ইসমাঈল হোসেন, বিশ^ম্ভরপুর উপজেলা আমির মো: কামাল হোসেন, সুনামগঞ্জ পৌর আমির মো. রুহুল আমিন, ছাতক উপজেলা আমির ও জেলা আইটি বিষয়ক সম্পাদক মো. রেজাউল করিম, মো. ছাদেম আলী, মো. আলাল উদ্দিন, আছমা আক্তার, মো. মারফত আলী, সোহানা আক্তার, শামীমা আহমদ ও জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
Leave a Reply