সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জ পৌরশহরের নবীনগর এলাকায় স্ত্রীর সাথে অভিমান করে তিন সন্তানের জনকের গলায় ওড়না দিয়ে আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। তার নাম মো. কালা মিয়া (৩৪)। তিনি সদর উপজেলার মাইজবাড়ি গ্রামের মৃত মখছদ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রীর দ্বিতীয় পুত্র। আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দেখতে আসেন, কুরবান নগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল বরকত ও পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসনাত কাওসার এবং মৃতের আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসীরা।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত অনুমান ৯ টা থেকে ১০টার কোনো এক সময় কালা মিয়া নেশাগ্রস্থহয়ে বাসায় এসে স্ত্রীর সাথে পারিবারিক কলহের জেরে অভিমান করে তিনি বসতঘরের একটি রুমে গলায় ওড়না পেছিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। রাত অনুমান ১০টার দিকে মৃতের বড় ভাইয়ের স্ত্রী ইয়ারুন বেগম নাস্তা নিয়ে দেবর কালা মিয়াকে ডাক দিতে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে তিনি চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন জড়ো হন । খবরটি শুনে কালা মিয়ার চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর মিয়া রাত পৌনে ১১ টায় সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানার এস আই ওমর ফারুকের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কালা মিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ সনাক্ত করেন, পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তার ঝুলন্ত দেহ নীচে নামানো হয়। পুলিশ পরে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। আত্মহত্যার ঘটনায় সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী এস আই ওমর ফারুক। কালামিয়া (৩৪) সদর উপজেলার মাইজবাড়ি গ্রামের মৃত মখছদ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রীর দ্বিতীয় পুত্র। সে পেশায় একজন ইজিবাইক (ব্যাটারিচালিত অটো) ও ট্রাক ড্রাইভার ছিলো। ট্রাকে সুযোগ না পেলে সে প্রায়ই অটো-ইজিবাইক চালাতো। ড্রাইভারি পেশায় থাকার কারনে সে নেশা করতেন এমনটাই জানিয়েছেন আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব ও প্রতিবেশীরা।
নিহতের বড়ভাই মনির মিয়া বলেন, আজকে আমার মেয়ের বিয়ে ছিল যার কারনে আমরা সকলেই ব্যস্ত ছিলাম। সবাই বিয়ের ব্যস্ততায় ছিলেন, অপরদিকে ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করছিলো, এদিকে এমন কাজ করলো আমি ভাই হারালাম।
নিহতের স্ত্রী তাসলিমা বেগম জানান, আমার স্বামী পেশায় একজন ড্রাইভার। সে নেহা এন্টারপ্রাইজের মালিক বিল্লাল মিয়ার ট্রলি ট্রাক চালাতে।শুক্রবার সকালে ট্রাক চালিয়ে দুপুরের দিকে বাসায় এসে বলে, শ্বশুরবাড়ির দিকে যাবে বলে চলে যায়। যথারীতি সে বিকেলের দিকে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় আসে এবং আমাকে বেদড়ক মারপিট করতে থাকে। উপায় না দেখে আমার বড়মেয়ে দৌড়ে স্বজনদের কাছে যায় এবং তারা এসে আমাকে উদ্ধার করে। পরে বড়ভাই জমির মিয়ার বাসায় আমাকে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে আমার স্বামী ফোন করে আমাকে বাসায় আসার জন্য ডাকলে আমি আসবনা বলে জানিয়ে দেই। রাতে জানতে পারি আমার স্বামী গলায় ফাঁসী দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আত্মহত্যার খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করেছে এবং লাশের সুরতহাল রিপোর্টশেষে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে.।
Leave a Reply