বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, আঘাত আসলে এখন থেকে পাল্টা আঘাত হবে। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা মাইর খেয়েছে তার জন্য আমরা মর্মাহত। কিন্তু তাদেরকে আমরা ধন্যবাদ জানাই, সংগ্রামী অভিনন্দন জানাই যে তারা পাল্টা প্রতিরোধ করছে, পাল্টা ওদের মাইর দিয়েছে।
বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর বলেন, এখন যেখানেই আঘাত আসবে, সেখানে পাল্টা আঘাত দিতে হবে। এই আঘাত দেওয়ার জন্য আমাদেরকে সশরীরে প্রস্তুত থাকতে হবে। আমাদের মনে করতে হবে, আমরা দেশটাকে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছি, অন্যের হাতে মার খাওয়ার জন্য না। আমাদের মাইর দেওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যদি আমরা দেশ স্বাধীন করতে পারি, তাহলে আমাদের দেশে যারা নাকি পুট-ফাট করে, চোখ রাঙায়, পোশাক পড়ে লাফালাফি করে তাদেরকে ব্যবস্থা করতে বেশি সময় লাগবে না। আমরা তাদের পরাস্থ করতে পারব। যুদ্ধ যদি করতে চান তাহলে অলিতে-গলিতে যুদ্ধ শুরু হবে। সরকারকে বলব, আপনাদের যত শক্তি আছে, যত মারতে পারেন। আমরা মরার জন্য প্রস্তুত। জেলখানা আমাদের জন্য বিষয়বস্তু না। জেলের ভয় দেখিয়ে আমাদের কোনো লাভ হবে না।
পদ্মা সেতুতে নিয়ে খালেদা জিয়াকে ‘টুস’ করে ফেলে দেওয়া উচিত- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এই মানববন্ধন করে।
প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আপনি (শেখ হাসিনা) এই ধরনের একটা হুমকি দিয়েছেন। আর আপনার দলের সাধারণ সম্পাদক বলে বিএনপি বুঝতে ভুল করছে, আমরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছি। বাংলা কথা সবাই বুঝে-সেটা চিটাগাংয়ের বাংলা হোক, নোয়াখালীর বাংলা হোক অথবা গোপালগঞ্জের বাংলা হোক। সুতরাং এই বাংলা শব্দ বুঝতে কারো বিভ্রান্ত হওয়ার কথা না। আমি দয়া করে বলব, জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবেন না। সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ রাখতে পারবেন, খবর বন্ধ রাখতে পারবেন, কিন্তু কোনো ঘটনা ঘটলে- তা বন্ধ রাখার ক্ষমতা আপনাদের হাতে নেই। আপনাদের যেতে (ক্ষমতা ছেড়ে) হবেই।’
প্রধানমন্ত্রীর উক্তিকে হত্যার শামিল অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘আপনি (শেখ হাসিনা) যে কথা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতুর ওপর থেকে ফেলে দেবেন। এটা ক্রিমিনাল কোর্টে এটেম টু মার্ডার। কারণ আপনি হুকুম ঘোষণা করেছেন। এরজন্য আপনাকে মামলা খেতে হবে। আর পোষ্য আদালত এই মামলা নেবে না। যদিও আপনার কোনো থানা এই মামলা নেবে না- এটা আমরা জানি। কিন্তু জনগণের আদালতে মামলাটা অবশ্যই গ্রহণ হবে, সেই বিচারটা জনগণের আদালতে হবে যদি আপনি দেশে থাকেন।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘এখনো সময় আছে, খালেদা জিয়ার বাসভবনে গিয়ে ক্ষমা চান। ক্ষমা পাবেন। আর অপকর্ম করবেন না, ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান। নিজে ভালো থাকুন, দেশবাসীকে ভালো থাকতে দিন। দেশের মানুষের মালিকানা দেশের মানুষের হাতে তুলে দিন। তা হয়ত বা আপনার জন্য নিরাপদ হবে।’
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদিন, মহানগর বিএনপি নেতা নবী উল্লাহ নবী প্রমুখ।
Leave a Reply