সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ত্রাণের জন্য হাহাকার জগন্নাথপুরে লাখো মানুষ বাড়িছাড়া । সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে গ্রামের পর গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ উপজেলার লাখো মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এদিকে পর্যাপ্ত খাবার না থাকায় বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে। ত্রাণের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে তারা ধরনা দিচ্ছেন।
বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পৌর এলাকার জগন্নাথপুর সদর, ইকড়ছই, ভবানীপুর, খালিকনগর, আলখানাপাড, মোমিনপুর, হাসিনাবাদসহ উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
এসব গ্রামের অধিকাংশ মানুষের বসতঘরে বন্যার পানি উঠেছে। তারা বাড়িঘরে তালা দিয়ে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কমিউনিটি সেন্টার, পৌরভবন, সরকারি-বেসরকারি ভবন ও উঁচু স্থানে গিয়ে উঠেছেন। ফলে বহু গ্রাম লোকশূন্য হয়ে পড়েছে।
গ্রামগুলোতে মানুষজন কম থাকায় রাত হলেই ডাকাতদের উপদ্রব শুরু হয়। ফলে জগন্নাথপুর পৌর এলাকাসহ ভাটি এলাকার অনেক মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
জগন্নাথপুর গ্রামের আবু মিয়া জানান, বন্যার শুরু থেকেই ডাকাতরা আমাদের বাড়িতে হানা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা রাত জেগে প্রতিরোধ করছি।
এদিকে জগন্নাথপুর-সিলেট সড়ক, জগন্নাথপুর-সুনামগঞ্জ সড়কসহ উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের সবকটি সড়ক পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও উপজেলার অধিকাংশ গ্রামে গত ৯ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই।
উপজেলা সদরে পানি কমতে শুরু করলেও উপজেলার নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার বাড়িঘরে এখনো হাঁটু সমান পানি রয়েছে। উপজেলা সদরের প্রধান ব্যবসা কেন্দ্র জগন্নাথপুর বাজারের বিভিন্ন গলি পানির নিচে।
চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, ইউনিয়নের সব গ্রামের বাড়িঘরে পানি। শত শত পরিবার এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন। পানি কিছুটা কমলেও দুর্ভোগের শেষ নেই মানুষের। বন্যাদুর্গতরা ত্রাণ পাচ্ছেন না। অন্যদিকে ডাকাতের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম শনিবার যুগান্তরকে জানান, ১৪০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৮৫ মেট্রিক টন চাল বন্যাদুর্গতদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে । খাবার স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সাধ্যমতো দিচ্ছি।
জগন্নাথপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ডাকাতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে প্রয়োজনীয় নৌযান না থাকায় হাওড় এলাকায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া খুবই কষ্টকর।
Leave a Reply