খাদ্যে ভেজাল থামছেইনা! খেজুরের গুড়ে থাকছে না রসের বিন্দুকণাও। চিনিতে আটা, হাইড্রোজ, ফিটকারি, সোডা, চুন, ডালডাসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে রাতের আঁধারে তৈরি হচ্ছে নকল খেজুরের গুড়।
গুড়ের জন্য প্রসিদ্ধ রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় আড়ানী চকরপাড়া গ্রামে এমনিই একটি কারখানায় অভিযান চালিয়েছে জেলা পুলিশ। অভিযানে কারখানা মালিকসহ সাতজন কারিগরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জব্দ করা হয়েছে ৫০ মণ ভেজাল গুড়।
সোমবার দুপুরে রাজশাহী জেলা পুলিশের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন।
তিনি জানান, রাজশাহী জেলার বাঘায় খেজুর গুড় তৈরিতে সুনাম রয়েছে। এই গুড় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়। আর এই সুনামকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল গুড় তৈরি করে বাজারে সরবরাহ করছে।
তিনি আরও জানান, এ নকল গুড়ে এমন সব রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে তা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এই গুড় খেলে দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাসহ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মৃত্যুও হতে পারে। তারা ৫০ কেজি ক্ষতিকর উপকরণ ব্যবহার করে ৫৫ কেজি গুড় তৈরি করছে।
এসপি বলেন, এই নকল গুড় তৈরিতে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় গুড় সমিতির প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। গ্রেফতারকৃত কারখানা মালিক রাকিব আলীও ওই সমিতির সদস্য। আরও অনুসন্ধান করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে যাদের আটক করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন আরও জানান, রোববার বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৫০ মণ খেজুরের ভেজাল গুড়, গুড়ভর্তি ৫৮টি ক্যারেট, ১০ বস্তা চিনি, ১৮ কেজি ফিটকারি, ২৫ কেজি চুন, ৬০০ গ্রাম ডালডা, ১ কেজি হাইড্রোজসহ গুড় তৈরির অন্যান্য উপকরণ জব্দ করা হয়েছে। এগুলোর নমুনা বিএসটিআই এ পাঠানো হবে। এরপর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গুড়গুলো ধ্বংস করা হবে।
অভিযানের সময় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কারখানা মালিক রকিব আলী (৪২), কারিগর সুমন আলী (৪২), আকবর আলী, অনিক আলী ওরফে পাইলট (৩০), মাসুদ রানা (৩০), বিপ্লব হোসেন ওরফে সাজু (২৫), মামুন আলী (২৭) এবং বাবু (২৫)।
Leave a Reply