শ্রীনগরে জীবনযুদ্ধে হার না মানা বৃদ্ধ সাদ্দাম হোসেনের (৭৫) সংসার চলে রিকশা চালিয়ে। মা-বাবা শখ করে নাম রেখেছিলেন মো. আবুল কাশেম ফজলুল হক।
উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের পক্ষ নিয়ে বুশের বিরুদ্ধে প্রচারণা করায় এলাকাবাসী তার নাম দেয় সাদ্দাম হোসেন। এখন এলাকায় সবাই তাকে সাদ্দাম হোসেন নামেই চিনেন।
উপজেলার ভাগ্যকুল, বালাশুর, রাঢ়িখাল, তিন দোকানসহ বিভিন্ন সড়কে তাকে রিকশা চালাতে দেখা যায়। বয়সের ভারে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ছেন তিনি। তার পরেও হাল ছাড়েননি সংসারের ঘানি টানতে।
পায়ে রিকশা চালিয়ে দৈনিক আয় করছেন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। ভাগ্যকুলের মাঠপাড়ায় ৩০ বছর যাবত একটি বাড়িতে স্ত্রী ও কন্যাদের নিয়ে বসবাস করেন তিনি।
বৃদ্ধ সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, কোনো পুত্র সন্তান নেই তার। এক কন্যার বিয়ে দিয়েছেন। জীবনের তাগিদে এই বয়সে প্যাডেল রিকশা চালাচ্ছেন। এতে সামান্য আয় হয়। ক্লান্ত শরীর জুড়িয়ে নিতে মাঝে মধ্যে রাস্তার পাশেই রিকশার আসনে একটু বিশ্রাম নেন।
স্থানীয়রা জানান, আমরা সবাই তাকে সাদ্দাম এমপি নামেই ডেকে থাকি। তিনি খুব আন্তরিক ও ভালোমনের একজন মানুষ।
এলাকাবাসী জানান, মো. আবুল কাশেম ফজলুল হক ওরফে সাদ্দাম হোসেন ৩০-৩৫ বছর আগে ঢাকার দোহার উপজেলার নারিশা এলাকা থেকে এখানে আসেন। তার পিতার নাম মহিউদ্দিন জঙ্গি। জঙ্গি তার বংশ পরিচয়।
বৃদ্ধ সাদ্দাম হোসেন জানান, পদ্মা নদীর ভাঙনে তাদের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি ভাগ্যকুলে এসে একটি বাড়িতে থাকেন। এখানে থাকতে তার কোনো ভাড়া দিতে হয় না। তবে সরকারিভাবে তাকে একটি জমিসহ ঘরের ব্যবস্থা করে দিলে তিনি খুব উপকৃত হতেন।
বৃদ্ধ সাদ্দাম হোসেনের দিকে সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিশেষ নজর দিবেন বলে আশা স্থানীয়দের।
Leave a Reply