ঢাকার ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে বিয়ের আশ্বাসে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া ইউনিয়নের এক সংরক্ষিত নারী প্রার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।ড
বুধবার সন্ধ্যায় ধামরাই পৌরশহরের ডুলিভিটা মায়ের দোয়া হাইওয়ে হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে এক সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গাঙ্গুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল কাদের মোল্লা মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া ইউনিয়নের গওলা গ্রামের তালাকপ্রাপ্ত নারী ও সাটুরিয়া ইউপির ৭, ৮ ও ৯নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে রেস্ট হাউসসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে। বিয়ের জন্য চাপ দিলে ওই ইউপি চেয়ারম্যান বিয়ে না করে নানা টালবাহানায় সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।
এরপর ওই নারী ক্ষিপ্ত হয়ে ধামরাই থানায় ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গেলে ওই নারীকে অভিযোগ করতে না দিয়ে থানা কম্পাউন্ড থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন চেয়ারম্যানের সহযোগীরা। পরে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ধামরাই পৌর শহরের ডুলিভিটা আমিন মডেল টাউন দ্বিতীয় প্রকল্পে মায়ের দোয়া হাইওয়ে হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের ভেতরে এক সালিশি বৈঠক বসে। উক্ত সালিশি বৈঠকে বিষয়টি সমঝোতা করতে ইউপি চেয়ারম্যান কাদের মোল্লাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়। ওই নারীকে নগদ ১ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য এক সপ্তাহের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে ওই নারী বলেন, আমাকে থানায় মামলা করতে না দিয়ে ওই হোটেলে নিয়ে এসে এক প্রহসনের সালিশি বৈঠকের আয়োজন করেন ওই ইইপি চেয়ারম্যান কাদের মোল্লার দোসররা। এমন সালিশ আমি মানি না। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের দোতলায় চেয়ারম্যানের রেস্টহাউসে আমাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে। এখন আমাকে বিয়ে করবে না তা কী করে হয়। আমাকে বিয়ে না করলে আমি ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করব।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাদের মোল্লা বলেন, ৪-৫ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে ওই নারীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। ওই সময় টাকাও নিয়েছে স্বামীর পরিবারের কাছ থেকে। এখন তার ছেলেকে আমার ইউনিয়নের অর্জুননালাই গ্রামে স্বামীর বাড়িতে উঠিয়ে দেওয়ার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন। আমি তাকে ও ছেলেকে নিয়ে তার স্বামীর বাড়িতে গেলে সে ঘরের ভেতরে গিয়ে ঘাপটি মেরে বসে। ঘর থেকে বের না হলে মহিলা পুলিশ ডেকে তাকে ওই বাড়ি থেকে বের করা হয়। এরপর থেকেই আমার সঙ্গে তার শত্রুতা। আর এরই জের ধরে সে আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছে। মান-সম্মানের দিকে তাকিয়ে সালিশি বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি।
এ ব্যাপারে ধামরাই থানার এসআই মো. আরাফাত হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ওই নারী থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে সিনিয়র অফিসারদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ ব্যাপারে তদন্তসাপেক্ষে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply