চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় পুলিশের কাছ থেকে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাদের স্বজনরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলি ও নিহতদের স্বজনদের নিক্ষেপ করা ইটপাটকেলের আঘাতে দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার চিতোষী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে চিতোষী-হাসনাবাদ সড়কের যোগাযোগ সাময়িক বন্ধ হয়। পুলিশ বিষয়টি স্বীকার করলেও বিস্তারিত বলতে পারেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় মনোহরগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকার তিন ব্যক্তি নিহত হন। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের লাশ নিতে স্বজনরা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান। কিন্তু প্রশাসন লাশ দিতে রাজি হয়নি। ফলে তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়।
বিকালে উঘারিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে নিহতদের লাশ শাহরাস্তি থানায় নেওয়ার পথে তাদের স্বজনেরা পুলিশকে বাধা দেন। একপর্যায়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে লাশ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি ছোড়ে। প্রায় আধাঘণ্টা পর পুলিশ লাশ নিয়ে থানায় আসে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত জনতা চিতোষী সেতুর ব্যাপক ক্ষতি করে। এ সময় বেশ কিছু দোকানপাট ও ঘরবাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা বা কাউকে আটক করা হয়নি।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় বলেন, আমরা সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি। আমিও সেখানে যাচ্ছি।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের পূর্ব নরহ গ্রামে একটি প্রাইভেটকার পুকুরে পড়ে গেলে পাঁচজন নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন- কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের রামদেবপুর গ্রামের মো. শাহ পরান তুষার (২২), একই এলাকার নরপাইয়া গ্রামের শাকিল (২৩), চাঁপা কেশতলা গ্রামের রেজাউল করিম (২৩) এবং যশোরের শার্শা উপজেলার ধান্যখোলা গ্রামের মো. নয়ন (২৪) ও গাজীপুর সদর উপজেলার উত্তর খাইলকুর গ্রামের মো. সাগর হোসেন (২৪)।
Leave a Reply