এম এ গফফারঃ আমাদের সোনার বাংলাদেশ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের তুলনায় অনেক অনুন্নত দেশ কিন্তু বিভিন্ন কৃষি কর্ম, শিল্প খারখানায় সমৃদ্ধশালী হয়ে ক্রমশ উন্নত দেশ হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে।
বিদেশের মতো কর্মযজ্ঞ ও পরিশ্রম করলে দেশের মাটিতে সোনা ফলে এবং দেশের মাটিতে সোনার হরিণ ধরা যায়। বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে যেসব যাত্রীরা দালালচক্রের মাধ্যমে সাত লক্ষ- আট লক্ষ-দশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে বিদেশ পাড়ি জমান তারা একবার ভেবে দেখেছেন কি অবৈধভাবে বিদেশ আগমনের বাস্তব চিত্র? বাস্তবতা কতটুকু নির্মম? সোনার হরিণ ধরতে গিয়ে কতটুকু মরন ফাদ অপেক্ষা করে? আপনারা জানেন কি? আপনাদের মহা মূল্যবান জীবনের সটিক উদ্দেশ্য ও লক্ষ কি হবে? অবৈধভাবে বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে যে কোন দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটলে আপনার মৃত্যুর জন্য কেহই দায়ী থাকবে না! কারন আপনি আইন বহির্ভূতভাবে অবৈধ পথে যেনে শুনে পা বাড়িয়েছেন। দালালচক্রের লোভনীয় অফারে ফাঁদ যেমন আছে তেমনি স্বপ্নের ইউরোপ যেয়ে লাখপতি-কোটিপতি হওয়ার অতিলোভ আপনার আর আপনার পরিবার এর সম্মতিতে ভিটেমাটি বিক্রি করে অনেক কষ্টের বিনিময়ে ৮/১০ লক্ষ টাকা জমা করে জেনেশুনে বাই-রোডে আপনারা যাচ্ছেন। আপনি জানেন কি এই টাকা আপনি ও আপনার পরিবারের ধ্বংশ ডেকে আনতে পারে।
হয়তো আপনি জানেন না ভবিষ্যৎ জীবনের গতিপথের লক্ষ্য। দালালের মাধ্যমে বাইরোডে গৃহযুদ্ধ কবলিত লিবিয়া হয়ে সাগর পথে ইতালি যাচ্ছেন তখন হয়তো তাদের আত্মরক্ষা ও বিপদ সংকটে এবং আইনের হাত থেকে বেচে যাবার জন্য সব যাত্রীদের সাগরে ফেলে দিবে অথবা দুর্যোগ পূর্ণ আবহাওয়ার কারণে প্রবল ডেউয়ে হয়তো যাত্রীবাহী ট্রলার, বোট ডুবে যেতে পারে?
হয়তো সে কারণেই সব যাত্রীদের মৃত্যু হতে পারে। এ মৃত্যুর জন্য প্রশাসন ও প্রেরণকারী দায়ী থাকবে কি? ভিটেমাটি বেঁচে আপনি দালাল ধরে জেনেশুনে যাবেন আর দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু দালালের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করবেন তা কি হয়_? এখানে আপনি ও আপনার পরিবারের দায় মোটা দাগের, অবশ্যি যারা টাকা উপার্জনের জন্য জেনে শুনে বিপদ সংকুল পথে পাঠাচ্ছেন তারাও এর দায় এড়াতে পারেন না। এজন্য সরকারের দায়ও অনেক- বিদেশ যাত্রীদের এয়ারপোর্টে হয়রানি, ঘুষ-দুর্নীতি, ভিসা প্রাপ্তিতে দীর্ঘসূত্রতা,রিকুটিং এজেন্সিগুলোর অযাচিত চার্জ, প্রতারণা সহ নানাবিধ কারণে অবৈধভাবে ঝুকিপূর্ণ পথে বিদেশ যাচ্ছেন বাংলাদেশের মানুষ, এতে করে একদিকে গন্তব্য পৌছে দালাল কে টাকা দেওয়া যাচ্ছে অপরদিকে তুলনামূলক সাশ্রয়ী দামে প্রবাসে যাওয়া হচ্ছে। এজন্য ইউরোপের ভিসা প্রাপ্তিতে সহজ লভ্যতা ও নিত্য নতুন দেশে জনশক্তি রপ্তানি করতে সরকারকে উদ্দ্যো নিতে হবে পাশাপাশি বৈধ ভিসার বিদেশ যাত্রীদের ম্যান পাওয়ার থেকে এয়ার টিকিট ও এয়ারপোর্টের হয়রানি বন্ধ করে যাত্রীবান্ধব সেবা নিশ্চিত করলে জীবনের ঝুকি নিয়ে অবৈধ পথে বিদেশ গমনের হার অনেকাংশে কমে আসবে বলে আমার বিশ্বাস।
তাই আমাদের সোনার বাংলা থেকে যে সব যাত্রীরা অবৈধ পথে বিদেশ পাড়ি জমান তাদের ভবিষ্যত উন্নত জীবন ব্যবস্থায় বলবো আপনারা জীবন মরণের ঝুকি না নিয়ে নিজের ও পরিবারের উন্নতির জন্য বৈধভাবে বিদেশ আসেন। আপনাদের জীবনের সঠিক নিশ্চয়তা সফলতার সন্ধ্যানে বিদেশ আসুন, সুখী সুন্দর জীবন উপভোগ করুন এবং দেশকেও স্বাবলম্বী করতে সহায়তা করুন।
লেখকঃ কবি এম এ গফফার, সম্পাদক ও প্রকাশক- দেশ বিদেশের খবর ডটকম, ডার্নাল শেফিল্ড, ইংল্যান্ড।
Leave a Reply