প্রবাসের ব্যস্ততম জীবনে সোশ্যাল মিডিয়ায় তেমন একটা সময় দেওয়া সম্ভব হয়না, তারপরও দেশের খবরাখবর জানতে মাঝেমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় টুমারতে হয়। আজকে ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখে খুবই মর্মাহত হলাম।
বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ বাংলাদেশের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ফুসফুস খ্যাত সুন্দর বনের সাতক্ষীরা অঞ্চলের একজন দরিদ্র দিন মজুরকে বাঘ পৈচাসিক হিংস্রতায় খুবলে খুবলে খাচ্ছে এমন একটি মর্মান্তিক ভিডিও ইউটিবে একজন শেয়ার করেছেন! এসব করুন ও অমানবিক হৃদয় বিদারক দৃশ্য ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা কি চিত্ত বিনোদনের অংশ? আমরা আরও বিভিন্ন ঘটনায় দেখেছি অল্প সংখ্যক হিংস্র মানুষের আক্রমণের শিকার ব্যক্তিকে উদ্ধারে কেউ এগিয়ে না এসে ডজন ডজন ব্যক্তি ছবি তুলে ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করতে! মানুষ মানুষের প্রতি কি একটুও সহানুভূতি নেই? কোথায় আমাদের বিবেক-বিবেচনা ও মনুষ্যত্ববোধ?
সুন্দর বনের বাঘ মানুষকে তার খাদ্য বানিয়ে ছিঁড়ে ক্ষতবিক্ষত করে খাবে আর কিছু মানুষ তাকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে বিশ্বকে দেখানোর জন্য ভিডিও ধারণ করে তা মিডিয়ায় আপলোড করবে? শত ধিক আমাদের মানবিকতাহীন হৃদয়ের জন্য।
সুন্দরবনে প্রতি বছরই অনেক মৌয়াল, জেলে ও কাঠ সংগ্রহকারী বাঘের পেটে যাচ্ছে অথচ প্রশাসন এব্যাপারে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছেনা, মানুষ মানুষের জন্য- জীবন জীবনের জন্য এটা কি শুধু নীতি বানী হয়ে থাকবে? আমরা কি জীবীকা নির্বাহের জন্য বাঘের খাদ্য হওয়ার ঝুঁকি জেনেও যাওয়া মানুষ গুলোকে রক্ষা করতে উদ্যোগী হবোনা ? এসব ভূখানাঙ্গা মানুষের চেয়ে কি বাঘের মূল্য বেশী?
বারবার মানুকে হত্যা করে বাঘ তার খাদ্যের চাহিদা মেটাবে আর প্রতিরোধে প্রশাসন কি কিছুই করতে পারেনা? প্রশাসন কি এসব মর্মান্তিক মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে?
একজন ব্যক্তির উপর তার পরিবার নির্ভরশীল, তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যতে শুধু একজন ব্যক্তি নিহত হচ্ছেনা সাথে গোটা পরিবার পরিজনের ভবিষ্যত অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে।
তাই সরকারের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ বিবেকের প্রশ্নে মানুষের জীবনের তাগিদে বেঁচে থাকার দাবীতে সুন্দরবনের মানুষকে বাঘের খাদ্য হওয়া থেকে বাঁচাতে এবং পরিবারের প্রিয়জনকে বেঁচে থাকতে জরুরীভাবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। আর যাতে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখতে না হয় বাঘে মানুষকে ছিঁড়ে খাওয়ার মর্মান্তিক দৃশ্য।
লেখকঃ কবি ও কলামিস্ট, সম্পাদক- দেশ বিদেশের খবর (অনলাইন নিউজ পোর্টাল)।
ডার্নাল, শেফিল্ড, ইংল্যান্ড প্রবাসী। ২ রা জ্যৈষ্ঠ, সোমবার, ১৬ মে, ২০২২ খ্রিঃ
Leave a Reply