অপূর্ব নৈস্বর্গীয় সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি, সুরমা নদীর স্রোতধারায় ঠাকুরভোগ গ্রামের জনবসতি। গ্রামের প্রকৃতি দৃশ্যাবলী অফুরন্ত মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য্যে ঘেরা ভাটি অঞ্চলের স্বনামধন্য এ গ্রামটি।
প্রবাহমান নদীমাতৃক সুরমার জলস্রোতশারার তীরে এ গ্রামটির অবস্থান। সুন্দর প্রকৃতির মাঝে অনন্য ও অতুলনীয় ঠাকুরভোগ গ্রামটি। প্রাচীন এ ঐতিহ্যবাহী গ্রামকে ঘীরে রয়েছে খাল-বিল নদী-নালা, উন্মুক্ত জলাশয়, সবুজ মাঠ ও পথ প্রান্তরের বর্ণনা দিতে গিয়ে পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বিখ্যাত নিমন্ত্রণ কবিতার কয়েকটি চরণ মনেপড়ে গেলো।
“তুমি যাবে ভাই- যাবে মোর গ্রামে?
আমাদের ছোট গায়ে-
গাছের শাখায় লতা-পাতায়
উদাসী বনের বায়,
প্রবাসের ব্যাস্ত কর্মজীবনে অবস্থান করেও স্মৃতির স্বর্ণালী পাতায় মনের ভাবনার আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে জীবনের অনেক শত শত স্মৃতিকথা, আজো ভাবি প্রিয় জন্ম-মাতৃভূমির আঁচলে থাকা অনেক অনেক দৃশ্যস্মৃতি। ইংল্যান্ড প্রবাসে থেকে দীর্ঘ ২১ টি বছর অতীত হয়ে গেলো, এ হারানো জীবনের অতীত দৃশ্যপটে অগনিত প্রাণের প্রিয়জন ও শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিকে হারিয়েছি, তারা চলে গেলেন সুদূর অজানা ভূবনে, তাদের সাথে প্রাণের সুখ-দুঃখ সমবেদনার কথা বলার সুযোগটুটুও পেলাম্না.২০০৪,২০০৭,২০০৮,২০১৪,২০১৬ ও ২০২০ এ গিয়ে ছিলাম প্রাণের স্ব-দেশ ভূমিতে। আত্মীয়স্বজন, আপনজন, বন্ধুবান্ধব অনেকের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে। তাদের সাথে প্রবাস জীবনের সুখ-দুঃখ প্রাণের অনুভূতির কথা বলে মনে আত্মতৃপ্তি পেয়েছি। আজও মনের ভাবনায় স্রোতধারায় মিশে রয়েছে তাদের স্নেহাদর,মায়া মহব্বত ভাল্বাসা, অবসর মূহুর্তে আজোও মনের আবেগে ভাবি গ্রামের প্রকৃতি ও মানুষের স্মৃতিকথা।
আমাদের ঠাকুরভোগ গ্রামের ঘন বসতিপূর্ণ জন সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা, আইন কানুন রক্ষার্থে ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে গ্রাম পরিচালনার দায়িত্বে প্রধান বিচারক যারা ছিলেন তারা এক এক্করে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। সেই শ্রদ্ধেয় বিচারকদের মধ্যে ছিলেন- জনাব আলহাজ্ব আব্দুল বারি খাঁন (ঠাকুর মিয়া), জনাব আং রউফ মিয়া (প্রাক্তন চেয়ারম্যান) জনাব আং মনাফ মিয়া, জনাব আছদ্দর মিয়া, জনাব আলহাজ্ব হিদ্রো উল্লাহ, জনাব তোতাই মিয়া, জনাব চমক আলী, জনাব হোশিয়ার আলী, জনাব বরকত আলী, জনাব রাশিদ মিয়া, জনাব আজমল খাঁন (পুলিশ), জনাব আদিল্মামদ (লন্ডনী) (মনোহর আলী), জনাব মনোফর মিয়া, জনাব আং নুর (পিতা- হানিফ উল্লা), জনাব আফছর খান, জনাব লোকমান মাস্টার (আমাদের প্রাইমারীর), জনাব আব্দুর রহমান, জনাব মাহমদ আলী, জনাব মৌলানা জয়নাল আবেদীন সহ আরোও অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তি ছিলেন। এ সব প্র্যাত প্রবীন জনসেবক ব্যাক্তিদের কথা আজও গ্রামের জন সমাজ গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেন। তাদের সু-শাসনের স্মৃতি আজও গ্রামের জন সাধারণের কাছে চির স্মরনীয় চির অবিশ্বস্মরনীয় হয়ে রয়েছে। তাদের ন্যায় বিচার ও আদর্শগাতা স্মৃতির ইতিহাসের পাতায় যুগ-যুগান্তর অমর হয়ে থাকবে কালের চিত্রে। বর্তমানে যারা গ্রামের শান্তি-শৃংখলার দায়িত্বে যারা নিয়োজিত রয়েছেন- তারা হলেন- জনাব আব্দুল জব্বার, জনাব আলহাজ্ব ইব্রাহীম খান, জনাব সুফি মিয়া, জনাব নুর মিয়া, জনাব ছালামত আলী, জনাব কমর উদ্দিন (প্রাক্তন মেম্বার), জনাব আব্দাল মিয়া, জনাব গোলজার মিয়া, জনাব আশিক মিয়া, জনাব মারজান খান, জনাব আং শহীদ(ছইদ উল্লা), জনাব মকবুল খান, জনাব সাইদুর রহমান, জনাব আকবুল খান, জনাব মুজিবুর রহমান (প্রাক্তন মেম্বার), জনাব মুজিবুর খান, জনাব জহুর আলী, জনাব মনো মিয়া, জনাব ফয়জুর রহমান( সাবেক শিক্ষক ও অবঃ পোস্ট মাস্টার), জনাব আব্দুল মতলিব, জনাব শামছুল আলম সহ সহযোগিতায় গ্রামের অনেক তরুণ-যুবা রয়েছেন। লিখনির শেষাংশে বলবো সুনামগঞ্জ জেলাধীন বর্ত্মানে শান্তিগঞ্জ উপজেলার অন্তর্ভূক্ত ঠাকুরভোগ গ্রামের প্রকৃতি, ঐতিহ্য স্বর্ণালী স্মৃতিদৃশ্য গণমানুষের জীবন যাত্রা চির অম্লান, চির অবিশ্বস্মরণীয়, চির অমর হয়ে মহা কালের চিরন্তন গতিতে স্মরণী*য় হ্যে থাকুক।
লেখক:– এম.এ.গফফার- ডার্নাল,শেফিল্ড, ইংল্যান্ড,
২৫ সেপ্টেম্বর,২০২১
Leave a Reply